শনিবার, ৪ মে, ২০১৩

সীতাকোট বিহার



 সীতাকোট বিহার



সীতাকোট বিহার দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত একটি বৌদ্ধ বিহার। এই স্থাপত্যটি পরিকল্পনায় প্রায় বর্গাকৃতির। তোরণ অংশে ছিল ছুটি প্রহরীকক্ষ। বিহারের প্রবেশপথটি ছিল উন্মুক্ত জায়গা দিয়ে একটি প্রবেশকক্ষের দিকে। প্রবেশকক্ষটি ছিল বিহারকক্ষের সারিতে একই রেখায়। পূর্ব বাহুর উত্তরাংশে পেছনের দেয়াল ভেদ করে একটি সম্পূরক প্রবেশপথ ছিল। দক্ষিণ বাহুর বহির্মুখী অভিক্ষেপটি ছিল একটি হলঘরের মতো এবং সেই হলঘরে ঢুকতে হতো ভেতর দিক দিয়ে। বিহারটিতে ৪১টি কক্ষ ছিল, উত্তর বাহুতে ৮টি এবং অন্য তিন বাহুতে ১১টি করে। কক্ষগুলোর পেছনের দেয়ালে কুলুঙ্গি ছিল এবং কক্ষগুলো দেয়াল দ্বারা বিভক্ত ছিল। বিহারের কক্ষগুলো অভ্যন্তরীণ টানা বারান্দার সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। বিহারের পূর্ব, পশ্চিম এবং দক্ষিণ বাহুর কেন্দ্রীয় কক্ষত্রয় অনন্যসাধারণ কক্ষের তুলনায় আয়তনে বড় ছিল। প্রতিটি কেন্দ্রীয় কক্ষের একটি করে ইটের বেদি ছিল।
সেখানে পূজার মূর্তি রাখা হতো। খুব সম্ভব দক্ষিণ দিকে কেন্দ্রীয় কক্ষটি ছিল প্রধান মন্দির। প্রধান মন্দিরটির সম্মুখে স্তম্ভ শোভিত প্যাভিলিয়নটি ম-প হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকবে। বিহার ভবনের দক্ষিণ দিকে একটু দূরে কিন্তু মূল ভবনের সঙ্গে আবৃত পথ দ্বারা সংযুক্ত সম্মুখভাগে বারান্দাসহ পাঁচটি কক্ষ পাওয়া যায়। প-িতদের অভিমত, এগুলো শৌচাগার হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। ছাদ ঢালাইয়ের জন্য চুন, সুরকি এবং ভার বহনের জন্য কড়িকাঠের ব্যবহার দেখা যায়।
সীতাকোট বিহার আঙিনার মধ্যবর্তী স্থানে প্রধান মন্দির ছিল না। এখানে পাহাড়পুর, শালবন বিহার এবং আনন্দ বিহারের মতো ঐতিহ্যবাহী পোড়ামাটির ফলক অনুপস্থিত। তবে আকার ও আয়তনের দিক দিয়ে সীতাকোট বিহারের সঙ্গে বগুড়ায় অবস্থিত ভাসু বিহারের অনেক মিল রয়েছে। ব্রোঞ্জনির্মিত একটি বোধিসত্ত পদ্মাপাণি এবং বোধিসত্ত মঞ্জুশ্রী মূর্তি সীতাকোট বিহার থেকে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রত্ননিদর্শন। মূর্তি দুটির গঠনশৈলী থেকে অনুমান করা যায়, এগুলো সপ্তম-অষ্টম শতাব্দীতে তৈরি। বিহার নির্মাণ সম্পর্কে দুটি নির্মাণকালের কথা বলা হলেও স্তরবিন্যাস পদ্ধতিতে বিহারের কাল নির্ধারণ করা হয়নি। তখ্য সংগ্রহ – সংবাদ।
https://www.facebook.com/ronystourinfo


৩টি মন্তব্য: