আদীবাসি বা উপজাতির কথা (2)
মারমা:
পার্বত্য জেলাসমূহে মারমারা সংখ্যায় দ্বিতীয় হলেও খাগড়াছড়িতে
এরা তৃতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ উপজাতি। বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলাতেই মূলত: এদের বসবাস।
মারমারা অত্যন্ত অতিথিপরায়ন। এ জনগোষ্ঠীর মেয়েরা অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন। তারা বৌদ্ধ
ধর্মাবলম্বী এবং তাদের প্রধান সামাজিক উৎসব ‘‘সাংগ্রাইং’’। সাধারণত: মারমা
বর্ষপঞ্জি ঘোষণাপত্র ‘‘সাংগ্রাইংজা’’ এর মাধ্যমে চান্দ্রমাস অনুসারে মারমারা তাদের
প্রধান সামাজিক উৎসব ‘‘সাংগ্রাইং’’ পালন করে থাকে। বহু পূর্বে মারমারা ‘‘মগ’’
নামেই পরিচিতি ছিল। বর্তমানে তারা নিজেদের ‘‘মারমা’’ বলেই দাবি করে। ‘‘মারমা’’
শব্দটি ‘‘মারমাজা’’ বা ‘‘ম্রাইমাচা’’ নামক উপমহাদেশীয় প্রাচীন ব্রাহ্মী হস্তাক্ষর
লিপি থেকে উদ্ভুত। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে সরকারিভাবে মারমা জনগোষ্ঠী স্বতন্ত্র
উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
মারমা ভাষার
নিজস্ব হরফও আছে।
মারমা ছবি : ইন্টারনেট |
এ বর্ণমালা ‘‘মারমাচা’’ বা ‘‘ম্রাইমাজাহ্’’ নামে পরিচিত।
১৩ টি স্বরবর্ণ ও ৩৬ টি ব্যঞ্জনবর্ণ নিয়ে প্রণীত মারমা বর্ণমালা প্রাচীন ভারতের
ব্রহ্মী ও খরেষ্ট্রী লিপি হতে উদ্ভুত। মারমারা বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী হলেও
তারা অন্যান্য উপজাতীয়দের ন্যায় দেবতা ও অপদেবতায় বিশ্বাসী। তবে বৌদ্ধ ধর্মের
অন্যান্য উৎসব পার্বণাদিও তারা পালন করে। মারমা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী থালা নৃত্য,
প্রদীপ নৃত্য, পরী নৃত্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন